স্বচ্ছল ব্যক্তিরা পাচ্ছেন প্রতিবন্বী ভাতা বাউফলে টাকার বিনিময় প্রতিবন্দ্বীর মেডিকেল সনদ

স্বচ্ছল ব্যক্তিরা পাচ্ছেন প্রতিবন্বী ভাতা বাউফলে টাকার বিনিময় প্রতিবন্দ্বীর মেডিকেল সনদ

 মো. দেলোয়ার হোসেন বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফলে টাকার বিনিময় মেডিকেল সনদ নিয়ে  সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অস্বচ্ছল প্রতিবন্দ্বীদের জন্য বরাদ্ধকৃত ভাতা সুস্থ্য-স্বচ্ছল ব্যক্তিরা পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতা।
 এমন কয়েকজন ভূয়া প্রতিবন্দ্বীর সন্ধান মিলছে উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ড ভরিপাশা গ্রামে। সদ্য সাবেক স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.খলিলুর রহমান টাকার বিনিময় এসব সুস্থ্য ব্যক্তিদের প্রতিবন্দ্বী ভাতার আওতায় নিয়ে এসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।  
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের মো.কাদের মাস্টারের ছেলে মো. মিজানুর রহমান একজন সুস্থ্য সবল মানুষ। পেশায় তিনি একজন কৃষক। তার রয়েছে একাধিক মাছের ঘের ও কৃষি খামার। তিনি পাচ্ছেন অস্বচ্ছল প্রতিবন্দ্বী ভাতা।
 একই গ্রামের মো. চান্দু হাওলাদারের মেয়ে মোসা. নুরজাহান বেগম ও মো. চাঁন মিয়া ফরাজীর ছেলে আ. হক ফরাজী নাম রয়েছে প্রতিবন্দ্বী ভাতা তালিকায়।তাদের কেউ প্রতিবন্দ্বী না। আ.হক ফরাজী কিটনাশক ব্যবসায়ী অপরদিকে নুরজহান গৃহণী। শুধু তারা নয় জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিবন্দ¦ী ভাতা ভোগ করছেন ওই গ্রামের মো. আফসের মল্লিকের মেয়ে মোসা.নিলুফা বেগম ও জোনাবালী খাঁনের মেয়ে সাদেজা বেগম।
স্থানীয়রা জানান, তাঁরা কেউই প্রতিবন্ধী না। সবাই সুস্থ্য সবল মানুষ। স্থানীয় খলিল মেম্বার টাকা খেয়ে তাদের কে প্রতিবন্দ্বীর তালিকায় নাম দিয়েছেন।এতে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত প্রতিবন্দ্বীরা।
সুস্থ্য হয়েও কেনো প্রতিবন্দ্বী ভাতা নেন এমন প্রশ্নের সদত্তোর দিতে পারেনি এসব সুস্থ্য প্রতিবন্দ্বীরা।
সূত্রে জানা যায়, কেশবপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. খলিলুর রহমান বাউফল হাসপাতালের বিশেষ একটা চক্রকে ম্যানেজ করে  জালিয়াতি মাধ্যমে সুস্থ্য মানুষদের প্রতিবন্দ্বী মেডিকেল সনদ সংগ্রহ করেন। পরে সমাজসেবা অফিস থেকে প্রতিবন্দ্বী পরিচয়পত্র নিয়ে তাদেরকে প্রতিবন্দ্বী ভাতার তালিকায় নিয়ে আসেন।এর বিনিময়ে খলিল মেম্বার প্রতি নামে হাতিয়ে নেয় ৫ থেকে ৭হাজার করে টাকা।এ জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছে বাউফল হাসপাতালের বড় একটি চক্র।
এলাকাবাসী জানান, খলিল  মেম্বার থাকাকালিন সময় কেশবপুর ইউনিয়নের প্রতিবন্দ্বী,বয়স্ক,বিধবাসহ বিভিন্ন ভাতা তালিকায় অনিয়ম করে ছিলেন। হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা। অনেকের নামে বিভিন্ন  ভাতার কার্ড করিয়ে নিজেই উত্তোলন করেছেন টাকা। যা ভাতাভোগীরা জানেনই না। এছাড়া কেশবপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডে সরকারের বরাদ্ধকৃত উন্নয়নকাজে করেছেন ব্যাপক অনিয়ম। একই ইউনিয়নের তাঁর অন্যতম সহেযাগী হিসাবে ছিলেন বাউফল হাসপাতালের হারবাল সহকারি মো.সবুজ।
এবিষয়ে হাসপাতালের হারবাল সহকারি সবুজ বলেন,এসব জালিয়াতির সাথে আমি জড়িত না। খলিল মেম্বার ডাক্তাদের মাধ্যমে প্রতিবন্দ্বী মেডিকেল সনদ নিয়েছে। কিভাবে নিয়েছে তা আমি জানি না।
 ইউপি মেম্বার মো. খলিলুর রহমান বলেন,আমার কাছে প্রতিবন্দ্বী ভাতার জন্য আসলে আমি সুপারিশ করে হাসপাতালে পাঠাই। ডাক্তাররা তাদেরকে প্রতিবন্দ্বী সনদ দিলে তারা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রতিবন্দ্বী ভাতা পাচ্ছেন। সুস্থ্য ব্যক্তিদের কোন স্বার্থে প্রতিবন্দ্বী হিসাবে সুপারিশ করলেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি মেম্বার খলিল।
এব্যাপারে নবনির্বাচিত ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সাল্হে উদ্দিন পিকু বলেন,আমি নতুন চেয়ারম্যান। সাবেক চেয়ারম্যানের সময় এমন ঘটনা ঘটছে।
 বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাক্তার প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন,তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 বাউফল উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতিবন্দ্বী মেডিকেল সনদ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিবন্দ্বী যাচাই-বাচাই কমিটির মাধ্যমে তালিকা আমাদের কাছে জমা দেওয়া হয়। আমরা শুধু এটা বাস্তবায়ন করি। যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রতিবন্দ্বী  ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন,এ বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।